“চেনা সুখ : চেনা মুখ” ৷ প্রথম অধ্যায় : পর্ব – ২৮

🔗 Original Chapter Link: https://chotimela.com/archive/চেনা-সুখ-চেনা-মুখ-৷-প্রথ-29/

🕰️ Posted on Sat Jan 02 2021 by ✍️ Ratinath (Profile)

📂 Category:
📖 2347 words / 11 min read
🏷️ Tags:

Parent
“এক নবীনা তরুণীর মনে জননীর অবৈধ যৌনতার দৃশ্য ওকে কিভাবে অজাচার যৌনতার পথে ভাসিয়ে নিয়ে যায়..তারই এক বাস্তবিক রসঘন পারিবারিক কাহিনীর অনুলিখন-রতিনাথ রায়..৷” **গত পর্ব যা ঘটেছে: ভুটান ভ্রমণে প্রথম দু দিন দিনে ভ্রমণ ও ১ম রাতে মানসী ও ২য় রাতে শিখাকে রমণ করেন ব্রজেন ৷ তয় রাতটি বরাদ্দ হয় মাম্পির জন্য..সেই সফল যৌনবাসর সম্পন্ন করে মাম্পিকে নিয়ে ঘুমিয়ে যান ব্রজেন..তারপর কি ?..সপ্তর্বিংশ পর্বের পর.. *পর্ব-২৮, সকাল হতেই ঘুমটা ভাঙে মাম্পির ৷ আড়মোড়া ভেঙে নড়ে ওঠে ও ৷ আর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৬টা বাজে ৷ কম্বলের তলায় নিজেকে ব্রজেনের দৃঢ় আলিঙ্গন থেকে মুক্ত করে নেমে আসে খাট থেকে ৷ নিরাবরণ শরীরে একটু শীতশীত অনুভূতি হয় ৷ বিছানার পাশে রাখা শালটা দিয়ে নিজেকে মুড়ে নিয়ে ব্রজেনকে ঠেলা দিয়ে বলে- ওঠো,সকাল হয়ে গিয়েছে ৷ আমি স্নানে গেলাম ৷ ব্রজেন একটা হাই তুলে বলেন- এতো সকালে ওঠার কী দরকার ৷ মাম্পি ব্যাগ থেকে পোশাক বের করতে করতে বলে- হুম,আরো শুয়ে থাকি তোমার সাথে ৷ ওরা প্যাক দিক আর কি? ৬টা বাজে ৷ বেড়াতে যাওয়ার আছে না ৷ এই বলে – মাম্পি টাওয়েলে ব্রা-প্যান্টি মুড়ে বাথরুমে ঢুকে যায় ৷ স্নান সেরে প্যান্টিটা পড়ে তারপর বুকে ব্রা টা পড়তে গিয়ে হুকটা আটতে পারে না ৷ তখন খানিকটা বাধ্য হয়ে বাথরুমের দরজা থেকে পিঠ ফিরিয়ে ব্রজেনকে বলল- এই, শুনছ! ব্রার হুকটা একটু আটকে দাও না! ব্রজেন বিছানা থেকে নেমে মাম্পির দিকে এগিয়ে যান ৷ বিন্দু বিন্দু জলের ফোঁটা মাম্পির মসৃণ নগ্ন পিঠে ফুঁটে রয়েছে দেখে ব্রজেন মুখ ঘষে চুমু দিয়ে মুখটা ঘষতে থাকেন নগ্ন যুবীতর পিঠে ৷ মাম্পি আঃউমঃউফঃকরে গুঁঙিয়ে উঠে বলে- উফঃ, এই সকালে আর দুষ্টুমিটা নাই বা করলে ৷ ছাড়ো,প্লিজ ৷ ব্রজেন আর খানকক্ষণ মাম্পির পিঠে মুখ ঘঁষে ব্রার হুক আটকে দিলেন । মাম্পি বাথরুমের ভিতর ঢুকে যায় ৷ তারপর একটা উলিকটের গেঞ্জি পরে আরতির কিনে দেওয়া নতুন সালোয়ার স্যুটটা পড়ে নিয় বাইরে আসে ৷ তারপর নতুন সোয়েটার,এটা ব্রজেন কিনে দিয়েছিলেন ,পড়ে নিল। চুল আচড়ে মুখে হালকা ক্রিম মেখে বের হতে যাবে ৷ এমন সময় ব্রজেন ওর হাত টেনে ধরলেন । মাম্পি একটু লাজুক মুখে চোখে কটাক্ষ হেনে আদুরে সুরে বলল-এই! ছাড়ো এখন,নীচে যেতে হবে তো, সোনা! অনেক বেলা হয়েছে। সবাই উঠে পড়েছে। বেরোতে হবে তো ..৷ ব্রজেন বাধ্য হয়ে ওকে ছেড়ে দিতে মাম্পি একটু সরে বুড়ো আঙুল নাচিয়ে বলে- তুমিও এবার জলদি তৈরি হয়ে নাও ৷ ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে মানসী বলে- এতো দেরি করলে কেন ? মাম্পি দি! মাম্পি একটু হেসে বলে- ওই,ঠান্ডায় স্নান করতেই দেরি হোলো ৷ আজ কোথায় যাবো ? শিখা প্রেমা দোর্জিকে জিজ্ঞাসা করে ৷ প্রেমা দোর্জি বলে- আজ আপনাদের পারো শহরের আশপাশে বেশ কয়েকটি দ্রষ্টব্য স্থান রয়েছে সেইগুলো দেখতে নিয়ে যাবো ৷ মাম্পি বলে- বেশী হাঁটাহাঁটি কিন্তু আজ করতে পারবো না ৷ মানসী টেবিলের তলা য় শিখার হাতের চিমটি খেয়ে দেখে শিখা মাম্পির কথায় মুখ টিপে হাসছে ৷ মানসী চোখের ইশারায় শিখাকে সকাল-সকাল মাম্পিকে রাগিয়ে দ নিষেধ করে ৷ প্রেমা দোর্জি হেসে বলে- পারো শহরে অল্প কিছু হাঁটা আছে ৷ ব্রজেন বলেন- ঠিক,আছে চলোতো,বেরোনো যাক আগে..৷ প্রেমার গাড়িতে গিয়ে সকলে বসলে ৷ প্রেমা গাড়ি স্টার্ট করে ৷ প্রথম এলো..রিম্পু জোঙ.. রিম্পু জোঙ আগের জোঙগুলির মতো অত বড় না হলেও ঘুরে দেখতে বেশ ভালো লাগল ওদের । কিছুটা ওপরে উঠে পারো মিউজিয়াম। একসময়ের তাজং দুর্গটিই বর্তমানে জাতীয় মিউজিয়াম। মিউজিয়ামের ডাকটিকিট ও প্রাচীন মুদ্রার সংগ্রহ বেশ চমকপ্রদ। এখান থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে তিব্বত সীমান্তে ড্রুকগিয়াল জং দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। দুর্গ থেকে নেমে ওরা পৌঁছাল কিচু মনাস্ট্রি। মনাস্ট্রির ভিতরের কমলালেবুর গাছগুলিতে সারাবছরই ফল ধরে। মনাস্ট্রির মূল কক্ষে গুরু পদ্মসম্ভবের বিশালকায় একটি মূর্তি আছে। হাতে সময় থাকলে ট্রেক করে আসা যায় পাহাড়ের মাথায় তাকসাং গুম্ফা থেকে – কষ্টসাধ্য পথের জন্য এই গুম্ফার প্রচলিত নাম –‘বাঘের বাসা’ –‘টাইগার’স নেস্ট’! কিন্তু মাম্পি ট্রেকিংএ আপত্তি জানায় ৷ মানসী,শিখাও অনীহা প্রকাশ করে ৷ ফলে প্রেমা দোর্জি ওদের নিয়ে চলে আসে ৷ পারোর পথে চলতে ফিরতে ওদের চোখে পড়ে ভুটান ও তিব্বতের বাসিন্দাদের কাছে অতি পবিত্র পর্বতমালা ‘চোমো লহরি’ (২৪,০৩৫ ফুট) – পারো থেকেই ট্রেক পথ গিয়েছে ‘ভোন্টে লা’ –চোমো লহরি বেস ক্যাম্পে। ভূটান এশিয়ার সবচেয়ে সুখী দেশ। পাহাড় ঘেরা পারোর বিমানবন্দর ভুটানের একমাত্র এয়ারপোর্ট— ‘দ্য মোস্ট ডিফিকাল্ট কমার্শিয়াল এয়ারপোর্ট অব দ্য ওয়র্ল্ড’। লোককথা, বৌদ্ধগুরু পদ্মসম্ভব বাঘের পিঠে চড়ে তিব্বত থেকে সোজা উড়ে এসেছিলেন এখানে। ভুটানের মেয়েরা যেমন সুন্দরী, তেমনই স্বাধীনচেতা। ছোট থেকে বৃদ্ধ… সকলেই সব সময়ে পরেন জাতীয় পোশাক। ভুটান বিশ্বের একমাত্র কার্বন নেগেটিভ দেশ, এই দেশ য্ত না কার্বন বাতাসে ছাড়ে তার চেয়ে বেশি কার্বণ শোষণ করে। ভুটানের শহর আর পথঘাট মুগ্ধ করার মতো। উঁচু-নিচু পথ, দু’ধারে প্রাচীন রীতির বাড়ি। একে পরিচ্ছন্ন তাতে যানজট নেই। ট্রাফিক পুলিশ ১০০ বছর আগের মতো হাতের ইশারায় নিয়ন্ত্রণ করে যানবাহন। প্রেমা দোর্জির কাছ থেকে মানসী নোট নেয় ৷ প্রেমা দোর্জি বলে- এরপর আসলে আগে আমার সাথে কথা বলে নেবেন ৷ আজ শুক্রবার পারোতে রবিবারে থাকলে সাপ্তাহিক বাজারটি ঘুরে দেখতেও ভালোলাগবে,বলে প্রেমা জানায় । বাজারের কথায় শিখা,মানসী হতাশ হয় বলে- এম্মা,আমরাতো রবিবার দুপরেই চলে যাবো ? তাই না স্যার ৷ শিখা একটু বেজার মুখ করে বলে ৷ ব্রজেন হেসে বলেন-হ্যাঁ ! তারপর প্রেমার দিকে তাকিয়ে দিকে বলেন- বাজার খোলে কখন ? প্রেমা জানায়- বাজারতো স্যার,সকাল ৭টার মধ্যেই খুলে যায় ৷ আপনাদের তো ১১টায় এয়ারপোর্টে রিপোর্ট করতে হবে ৷ শিখা বলে-তা হলেতো ঘন্টা ২টাইম পাওয়া যাবে ? কি বলিস মানু ৷ ব্রজেন বলেন- ঠিক,আছে ৷ রবিবার একটু আগে চেক-আউট করে না হয় বাজারে যাওয়া যাবে ৷ তারপর প্রেমাকে বলেন- প্রেমা,এবার তোমাদের স্পেশাল চা,আর কি খাবার পাওয়া যায় চলো লাঞ্চ করি ৷ প্রেমা হেসে বলে- চলুন তাহলে ৷ পাহাড়ের কোল ঘেঁষে একটা সুন্দর রেস্তোরায় প্রেমা ওদের নিয়ে আসে ৷ তারপর বলে..দিদিভাইরা আমাদের প্রধান খাবার হলো লাল চাল (বাদামী চালের মতো, কিন্তু এতে বাদামী স্বাদ থাকে, ধানের একমাত্র প্রকার যেটি উঁচু এলাকায় জন্মায়।), বাজরা, ভুট্টা ইত্যাদি। পাহাড়াঞ্চলের খাবারের তালিকায় আছে মোরগ, চমরী গাইয়ের মাংস, শুকনো গরুর মাংস, শুকরের মাংস এবং চর্বি এবং মেষশাবক ইত্যাদি। চমরীগাই ও গরু থেকে প্রাপ্ত ঘি ও পনির এতই জনপ্রিয় যে এই অঞ্চলের প্রায় সব দুধই ঘি এবং পনির তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। আর জনপ্রিয় পানীয়ের মধ্যে আছে সুজা(ঘি চা), দুধ চা, লাল চা এবং স্থানীয়ভাবে ভাত থেকে প্রস্তুত মদ আরা এবং বিয়ার। আমাদের প্রতিদিনকার মশলা তালিকায় আছে সিচুয়ান মরিচ থিঙ্গে, হলুদ, জিরা ইত্যাদি। আমাদের জনপ্রিয় স্ন্যাকসের মধ্যে আছে মোমো ,ভেজ,ননভেজ দুই হয় (ভূটানী ডাম্পলিং), শ্যাকাম ইইজ্যায়, খাব্জে, শাবালায়, জুমা (মশলাদার ভুটানী সসেজ), নুডলস ইত্যাদি। ব্রজেন হেসে বলেন-প্রেমা তুমিই বরং পাঁচ জনের জন্য অর্ডার করে দাও ৷ আর আমাদেরটায় ঝালটা একটু কমই দিতে পারো ৷ এই শুনে মাম্পি হেসে বলে-উফঃ,ঝাল খেতে খেতে জিভের ছাল উঠে গেল ৷ ওর কথায় সকলেই হেসে ওঠে ৷ প্রেমা অর্ডার দিতে উঠে যায় ৷ খাওয়ার পর্ব মিটলে ওদের জন্য আসে স্পেশাল ঘি-চা বা মাখন-চা ৷ সাদা রঙের চীনা মাটির কেটলিতে চা পরিবেশিত হলে মানসী,শিখা,মাম্পি প্রেমাকে জিজ্ঞেস করে- কি ভাবে এটা তৈরি হয় ৷ কেমন দেখতে লাগছে ৷ প্রেমা ওদের কথায় হেসে বলে-খেয়ে দেখুন দিদিভাইরা এটা তৈরিতে অনেকসময় ও পরিশ্রম লাগে ৷ ব্রজেন হেসে বলেন- তুমি বরং আমাদের বলো এটা কিভাবে তৈরি হয় ৷ ওরাও জানুক ৷ প্রেমা বলে-অর্ধ দিবস জলে চা পাতা ফুটানোর পর সর্বোৎকৃষ্ট মানের চা তৈরি করা হয় ৷ তখন এটা ঘন বাদামী রঙ হয় । অতঃপর এর গাদ ফেলা হয়, এবং টাটকা চমরী গাইয়ের মাখন ও লবণ সহ মিশিয়ে চোঙে রাখা হয় এবং যা পরবর্তীতে সেটাকে নাড়াচাড়া করা হয়। এর ফলে এটা বেগুনি বর্ণের তরলে পরিণত হয় ৷ যা প্রায় ভাপে সিদ্ধ মাংস বা ঘন তেলের মতো হয়। তারপর এটাকে চীনামাটির চা-পাত্রে, বা বয়ামে রাখা হয়, যেটা দেখতে জাপানী চাপাত্রের মতো। এই হোলো এই চা বানানোর পদ্ধতি ৷ প্রেমার কথা শুনে মাম্পি চীনামাটির বোলে চা ঢেলে সকলকে দেয় ৷ সকলেই বেশ একটু অস্বস্তি নিয়ে চা পান করতে থাকে ৷ চা খাবার পর মানসী জিজ্ঞাসা করে- আচ্ছা,প্রেমা’দা এখানে আসা থেকেই দেখছি দোকান-পাট সব মেয়েরাই করছে ৷ এখনকার ছেলেরা তাহলে কি করে ? প্রেমা হেসে বলে- ভুটানে নারীদেরই ঘর কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে দেখা যায় । কারণ আমরা নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এর পেছনের যুক্তি হলো, তাদের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য নারীর ক্ষমতায়ন। বর শ্বশুর বাড়ি যায়.. ভুটানের রীতি হলো বিয়ের পর পুরুষরা যায় শ্বশুরবাড়ি। সাধারণত নারীরা বিয়ে করে স্বামীকে ঘরে তুলে আনে। শুধু তাই নয়, অভিভাবকের সম্পত্তির সম্পূর্ণ ভাগ কন্যাসন্তানেরাই পেয়ে থাকেন। এ কারণে ভুটানে নারীদেরই রাজত্ব চলে। পুরুষ ও মহিলারা এক সাথে মাঠে কাজ করে, এবং তাদের উভয়েরই ছোট দোকান বা ব্যবসা থাকতে পারে। পুরুষেরা গৃহস্থালী কর্মকান্ডে, এমনকি রান্না বান্নার কাজেও পুরোপুরি অংশ গ্রহণ করে। পুরুষরা ঐতিহ্যগতভাবে পোশাক প্রস্তুত ও সেলাই করে (তবে ফেব্রিক বয়ন করে না)। শহরাঞ্চলে পশ্চিমা রীতির পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করছে, যে সব পরিবারে স্বামী উপার্জন করে এবং স্ত্রী গৃহস্থালী কাজ করে। উভয় লিঙ্গের মানুষই ভিক্ষু হতে পারে, যদিও বাস্তবে নারীরা তুলনামুলক কম ভিক্ষু হয়। ভুটানে শিক্ষার হার কম হলেও তা দ্রুত বাড়ছে। ১৯৮৮ সালে তাদের শিক্ষার হার ছিল মাত্র ২৫ শতাংশ। তবে এখন সরকারি মদতে তা বাড়ছে ৷ ভুটানের শিল্পগুলো তুলো বা কাপড় নির্ভর শিল্প। যেকোন উন্নয়ন পরিকল্পনা, যেমন রাস্তা তৈরি করাতেও, ভুটান ভারতীয় অস্থায়ী শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল। ভুটানের প্রতিটি অর্থবছর এমনভাবে সাজানো হয় যেন দেশটির আবহাওয়া এবং সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। ভুটানের সবচেয়ে বেশি আয় করে ভারতের কাছে জল শক্তি রপ্তানি করে। প্রেমার কথা শেষ হলে ব্রজেন হেসে বলেন- আমাদের মাম্পির জন্য একটা ছেলে দেখো প্রেমা..শ্বশুর বাড়ি গিয়ে থাকে যখন….৷ এই শুনে মানসী ও শিখা দুজনেই খিলখিল করে হেসে ওঠে ৷ মাম্পি বলে- ইস্,ওসব বিয়ে-টিয়ের মধ্যে আমি নেই,বাবা ৷ এসব কিন্তু ভালো হচ্ছে না স্যার ! মানসী মাম্পিকে জড়িয়ে ধরে বলে- আচ্ছা,প্রেমা’দা, এই ভুটানে ‘সঞ্জয় দত্তের’ মতো কোনো পাত্র আছে ৷ তাহলে মাম্পিদি হয়তো রাজি হবে ৷ শিখাও মানসীর কথায় ধুয়ো ধরে বলে- হ্যাঁ,দেখোনা, প্রেমা’দা৷ প্রেমা দোর্জি ওদের কথা শুনে কিছুই বুঝতে পারে না ৷ তাই একটা অবাক চাউনিতে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে ৷ মাম্পি মানসীর আলিঙ্গন ছাড়িয়ে বলে-মানু,একদম শয়তানি করবি না ৷ মার খাবি ৷ আর মুখপুড়ি শিখা দাঁড়া তোকে আজ দেখাচ্ছি মজা বলে,মাম্পি শিখার দিকে কিল দেখিয়ে উঠতে যায় ৷ তখন ব্রজেন হেসে..আহা..আহা,বেড়াতে এসে আবার ওসব কেন ? মাম্পি বোসো চুপ করে ৷ তারপর বলেন- হ্যাঁরে মানু এই ‘সঞ্জয় দত্ত’ আবার কে ? তোদের প্রফেসর-টর কেউ নাকি ? শিখা মাম্পির কিল দেখে একটু দুরে সরে ছিল,ও তখন এগিয়ে এসে ব্রজেনের পিছনে দাঁড়িয়ে হেসে বলে-সঞ্জয় দত্ত হোলো মাম্পিদির লাভার ৷ সিনেমা করে ৷ এইটুকু বলেই শিখা সরে যায় ৷ ব্রজেন শিখার কথা শুনে ‘কবুতর উড়ান’ হাসিতে ফেঁটে পড়েন ৷ মানসী ও দুর থেকে শিখাও সেই হাসিতে হাসতে থাকে ৷ রেঁস্তোরায় উপস্থিত লোকজনও ওদের দিকে ঘুরে তাকায় ৷ মাম্পি সকলের হাসির ফোঁয়ারা দেখে রাগত মুখে ‘এমন করলে খেলবো না ‘ গোছের মুখ করে উঠে প্রায় একরকম দৌঁড়েই রেঁস্তোরার বাইরে চলে যায় ৷ ব্রজেন তখন মানসী ও শিখাকে বলেন- এই এমন করে ওর পেছনে কেন লাগছো তোমরা ৷ যাও দেখো রাগ করে কোথায় গেল ? মানসী,শিখা মাম্পিকে খুঁজতে বের হয় ৷ ব্রজেন প্রেমাকে বলেন- প্রেমা বিল দিতে বল ৷ দেখি মেয়েটা রাগ করে আবার কোথায় গেলো ৷ প্রেমা হেসে বলে- ও,দিদিরা একটু হইচই করছেন, ঠাট্টা ইর্য়াকি করছেন..কোথায় আর যাবেন ৷ আছেন আশেপাশেই ৷ আর এখানে টুরিস্টদের কোনো সমস্যা নেই ৷ এই বলে- প্রেমা ,বিল আনতে বলে ৷ ব্রজেন বিল মিটিয়ে বাইরে এসে দেখেন মানসী ও শিখা মাম্পিকে দুপাশ থেকে জড়িয়ে পথের পাশে একটা বেঞ্চে বসে আছে ৷ আর মাম্পি রুমাল দিয়ে ঘনঘন চোখ মুছছে ৷ ইতিমধ্যে বিকেল হয়ে এসেছে ৷ ব্রজেন প্রেমাকে জিজ্ঞাসা করেন – হোটেল কতদুরে প্রেমা ? প্রেমা বলে- এই তো সামনের বাঁকটা ঘুরলেই আপনাদের হোটেল ৷ ব্রজেন শিখা,মানসীকে দেখিয়ে বলেন- ওদের হোটেলে পৌঁছে দাও ৷ আমি মাম্পিদিদমণির রাগ ভাঙিয়ে নিয়ে আসছি ৷ ব্রজেনর কথায় শিখা ও মানসী গাড়িতে উঠে বসে ৷ প্রেমা ওদের হোটেলে নিয়ে যায় ৷ ব্রজেন মাম্পির পাশে বসে ওর কাঁধে হাত রেখে বলেন- তুমিতো,আচ্ছা পাগলি দেখছি..আমরা তো মজা করছিলাম একটু..বলতে বলতে মাম্পির পিঠে,মাথায় হাত বুলিয়ে ভোলানোর চেষ্টা করতে থাকেন ৷ মাম্পি চোখ মুছে বলে- না,এইরকম ইর্য়াকি আমার পছন্দ না..একদম..না..ইস্, রেস্টুরেন্টে সবাই কেমন তাকিয়ে দেখছিল ৷ ব্রজেন ওকে নিজের শরীরে টেনে নিয়ে বলেন- আরে, এখানে কি কেউ তোমাকে চেনে নাকি ? মাম্পি ব্রজেনের গায়ে ঠেস দিয়ে বলে- না চিনুক, না চিনুক ! তবুও লজ্জা করে না বুঝি ৷ আর আপনিও হোহো করে হাসছিলেন ৷ খুব,মজা না ৷ আমি গরীব বলে.. ব্রজেন মাম্পির কথা শুনে বলেন – এই মামণি,এসব গরীব-টরীব কি কথা ৷ একদম এসব বলবে না ৷ আগেই না বারণ করেছি..তারপর মাম্পির গালে একটা ঠোনা মেরে বলেন- আচ্ছা,চলো,তোমাকে ওসব কথা আর কেউ বলবে না ৷ আর আমি আর হাসবোও না ৷ আরো তোমার বিয়ে নিয়ে কিছু বলবো না ৷ হয়েছে তো..নাও এবার চোখ মোছো..চলো সন্ধ্যা হয়ে এলো ৷ মাম্পি ব্রজেনের কথায় চোখ-মুখ মুছে বলে- আজ কি করবেন ? ব্রজেন বলেন- তুমি ঠিক করো কি করবে ? মাম্পি তখন হেসে বলে- ভুটানে এসতো আমরা সব কিছুই মোটামুটি খেলাম ৷ আজ কি একটু ড্রিঙ্ক করা যায় ৷ কোনোদিনতো টেস্ট করার সুযোগ হয়নি ৷ আর বাড়িতে ফিরলেতো আরওই হবে না ৷ ব্রজেন হেসে বলেন-ও,ড্রিঙ্ক করতে চাও ! তা,বেশতো চলো ৷ হোটেলে ফিরে দেখি কি ব্যবস্থা করা যায় ৷ ব্রজেন হাঁটতে হাঁটতে মাম্পির হাতটা হাতের মধ্যে নিয়ে নেন ৷ আর বলেন-তুমি মানসী, শিখাকে বলে দেখো,ওরাও যদি একটু -আধটু টেস্ট করতে চায় ৷ মাম্পি বলে- হ্যাঁ,বলছি গিয়ে ৷ আর কালকে যৌনশিক্ষা প্রসঙ্গে কি বলতে গিয়ে বললেন, ওদেরও জানা দরকার..তার কি হবে ৷ ব্রজেন হাঁটতে হাঁটতে মাম্পির হাতের হালকা চাপ দিয়ে বলেন-বেশ,এটাওও বোলো ৷ ওরাও যদি আগ্রহী হয় তবে বলবো ৷ মাম্পি ব্রজেনের গায়ে গা ঠেকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলে- বলে,আচ্ছা ৷ ব্রজেন মাম্পিকে নিয়ে হোটেলে ফিরে প্রেমাকে বলেন- কাল আর গাড়ির দরকার নেই ৷ আমরা এই আশেপাশেই হেঁটে বেড়াবো ৷ তুমি বরং রবিবার সকালে আমাদের বাজার ঘুরিয়ে এয়ারপোর্ট পৌঁছে দিও ৷ তারপর বলেন-ওকে,একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে বলেন- আচ্ছা,এখানে ড্রিঙ্ক করা যায়তো ? প্রেমা বলে- হ্যাঁ,হ্যাঁ ৷ হোটেলেইতো বার আছে ৷ ব্রজেন বলেন- মেয়েদের নিয়ে বারে নয় ৷ আমরা যদি রুমে বসে ড্রিঙ্ক করি ৷ প্রেমা বলে- হ্যাঁ,তাও করতে পারেন ৷ আপনি রুমে যান ৷ আমি ম্যানেজারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করছি ৷ তা আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের প্রোডাক্ট খাবেন না ৷ ব্রজেনে বলেন- না,না তুমি বরং,আমার সাথেই ম্যানেজারের কাছে চলো ৷ প্রেমা ব্রজেনকে নিয়ে হোটেলের ম্যানেজারের কাছে যায় এবং ব্রজেন রুমে বসে মদ্যপানের কথা বললে, হোটেলের ম্যানেজারের হেসে বলেন- রুম ডার্টি করবেন না ৷ তাহলেই হবে ৷ আমি রুম সার্ভিসকে আপনার কাছে পাঠাচ্ছি ৷ হোটেলের ম্যানেজারের সাথে কথা শেষ করে ব্রজেন প্রেমাকে নিয়ে রুমে আসেন এবং ওকে ভাড়ার টাকা মিটিয়ে দেন ৷ প্রেমা ব্রজেনের কাছ থেকে ভাড়ার টাকা বুঝে নিয়ে বলে- ঠিক আছে,স্যার ৷ আপনারা এনজয় করুন ৷ আর দিদিমনিদের জন্য ‘রেড-ওয়াইন’ অর্ডার করবেন ৷ আমি কাল একবার খবর নেবো ৷ বলে – ব্রজেনকে অভিবাদন করে প্রেমা চলে যায় ৷ ব্রজেন পোশাক পাল্টে রুমে বসতেই রুম সার্ভিস বয় এসে হাজির হয় ৷ ব্রজেন ওকে ‘রেড-ওয়াইন’ ও ফল,শুকনো মাংস, ইত্যাদির অর্ডার দিলে রুম সার্ভিস বয় সেলাম করে চলে যায় ৷ ব্রজেন রুমের সোফায় বসে তিন তরুণীর অপেক্ষা করতে থাকেন ৷ চলবে.. @.RTR09 WRITERS TELEGRAM ID. **ভুটান সফরের চতুর্থ রাত..সুরাপানের বন্দোবস্ত হয়..আজ রাতে..কি ঘটতে চলেছে ? তা জানতে আগামী পর্বে নজর রাখুন ৷ আপনাদের মন্তব্য জানান ৷
Parent